ক্রাইম ডেস্কঃ নবীগঞ্জ উপজেলার বাংলা বাজার থেকে মান্না আক্তার নামে এক যুবতীকে নিখোঁজ হওয়ার ১১ দিন পর মানবপাচারকারী দালাল চক্রের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় ওই চক্রের আবুল কালাম (৫০) নামে এক সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এবং ভিকটিম মান্না আক্তার (১৮) কে ধর্ষণের অভিযোগ এনে গতকাল শুক্রবার দুপুরে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে ওই উপজেলার দুলুভপুর গ্রামের সুনা মিয়ার কন্যা।
ভিকটিমের মা নাছিমা আক্তার জানান, একই গ্রামের মতিন মিয়ার পুত্র আবুল কালাম দীর্ঘদিন ধরে গাড়ি চালিয়ে বিভিন্ন যুবতি মেয়েদের মোটা অংকের টাকার প্রলোভন দিয়ে বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। তাদের খপ্পরে পড়ে অনেক যুবতি বিদেশে গিয়ে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফিরে আসছে। আবার কেউ কেউ সেই দেশের কারাগারে পড়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। দালালদের ইচ্ছা মাফিক মুক্তিপণ দিলে যুবতিদেরকে ফিরিয়ে দেয় তারা। এমনি ভাবে ওই চক্রের সদস্যদের নজরে পড়ে তার মেয়ে মান্না আক্তারের। একদিন আবুল কালাম তাকে প্রস্তাব দেয় তার মেয়েকে বিদেশে পাঠালে অনেক টাকা উপার্জন করবে। তিনি তার এ মিথ্যা প্রলোভনে পড়ে আবুল কালামের হাতে তুলে দেয় যুবতির মা।
২২ এপ্রিল রাত ৮টায় আবুল কালাম একটি গাড়ি দিয়ে মান্নাকে বিদেশে চাকরি দেয়ার কথা বলে নিয়ে যায় এবং বিভিন্ন স্থানে রেখে মান্নার উপর ওই চক্রের সদস্যরা পাশবিক নির্যাতন চালায়। মান্না ও দালাল আবুল কালামের কোন খোজ খবর না পেয়ে যুবতির মা নবীগঞ্জ থানায় একটি জিডি এন্ট্রি দায়ের করে। এর প্রেক্ষিতে এসআই পলাশ চন্দ্র দেব যুবতিকে উদ্ধার ও আবুল কালামকে ধরতে অভিযান শুরু করে। বিষয়টি দালালের নজরে আসলে ওই যুবতিকে দালাল হিজরাদের হাতে তুলে দেয়। এদিকে হিজরাও তার উপর নির্যাতন চালায়। গত বৃহস্পতিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে থানার এসআই পলাশসহ একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে আউশকান্দিগাও থেকে দালাল কালামকে গ্রেফতার করে। তার স্বীকারোক্তিমূলে মিরপুর হিজরা পট্টি থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে কালামকে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ। অন্যদিকে ভিকটিমকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। আজ শনিবার ভিকটিমের ডাক্তারী পরিক্ষা শেষে আদালতে পাঠানোর কথা রয়েছে।
এ ব্যাপারে এসআই পলাশ জানান, ভিকটিমের মা নাছিমা খাতুন বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় একটি নারী নির্যাতন মামলা করেছে। মামলার প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply