লোকালয় ২৪

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে উপজেলা প্রার্থী নিহত

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে উপজেলা প্রার্থী নিহত

ক্রাইম ডেস্কঃ হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াতে  আতংকিত হয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতর আলী মিয়ার ছেলে আল-আমিন মিয়া নিহত হয়েছেন।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্ত করা নিয়ে সোমবার বিকেলে দলীয় বর্ধিত সভায় এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এসময় আজমিরীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মিসবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া ও তার লোকজনকে উপজেলা পরিষদে প্রায় ৩ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে উত্তেজিত জনতা। এবং নুরুল হক ভূইয়া ও মিসবাহ উদ্দিন ভূঁইয়াসহ প্রায় ১০ জন আহত হয়েছে।

আহতদের চিকিৎসা দিচ্ছে পুলিশ

পুলিশ ফাকা গুলি ছোড়ে জনতাকে সরিয়ে দেয় এবং অবরুদ্ধ মিসবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া ও তার লোকদের উদ্দার করে হবিগঞ্জ সদর থানায় নিয়ে আসে। এই ঘটনায় আহতদেরকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে এবং নুরুল হক ভূইয়া ও মিসবাহ উদ্দিন ভূঁইয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটে প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে তাদেরকে পুলিশী হেফাজতে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আজমিরীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এ ঘটনা ঘটেছে। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

ওসি বলেন, ডাক্তার জানিয়েছে নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তিনি কীভাবে মারা গেছেন তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে। হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। আজ আছরের পর তার জানাজার নামাজ সম্পন্ন্য হবে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্র জানায়, আজমিরীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আতর আলী মিয়া গত ৩০ এপ্রিল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

আহতদের চিকিৎসা দিচ্ছে পুলিশ

গত ১১ জুন এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৪ জুন মনোনয়নপত্র দাখিলের কথা। ২৬ জুন বাছাই, ৩ জুলাই প্রত্যাহার ও ২৫ জুলাই ভোট গ্রহণ। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের তিনজনের নাম প্রস্তাব করে প্রেরণের জন্য বলেন।

এর প্রেক্ষিতে উপজেলা আওয়ামী লীগ সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের হলরুমে বর্ধিত সভায় বসে। উপজেলা সভাপতি মিসবাহ উদ্দিন ভূইয়ার সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার আলীর পরিচালনায় সভায় উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সভাপতি মিসবাহ উদ্দিন ভূইয়া, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মর্তুজা হাসান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতর আলী মিয়ার ছেলে আল-আমিন ও রানা রায় মনোনয়ন প্রত্যাশা করে নিজেরা প্রার্থী হওয়ার জন্য ঘোষণা দেন। কেউই ছাড় দিতে রাজি হননি।

এ সময় মিসবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং আল-আমিনের মাঝে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সভায় হট্টগোল শুরু হলে একাধিক ভাগে বিভক্ত হয়ে নেতাকর্মীরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় মিসবাহ উদ্দিন ভূইয়ার বেশ কয়েকজন লোক আহত হয় । এ সময় আল-আমিনের মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে তার পক্ষের লোকজন এসে হলরুমে নেতাকর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখে।

এদিকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। বর্তমানে মানে নিহতের পরিবার মামলার প্রস্ততি নিচ্ছে। পুলিশ হেফাজতে থাকা লোকদের আসামী করা হবে কিনা তা জানা যায়নি।